সদর প্রতিনিধি -নারায়ণগঞ্জ শহরকে ছিনতাই মুক্ত রাখতে ছিনতাইকারীদের চিহ্নিত করতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। নির্ভীক শহর রাখতে নারায়ণগঞ্জে ব্যবসায়ীদের স্বাধীনতা ফিরে নিয়ে আসতে এমন উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ হোসিয়ারি সমিতি। এরই মধ্যে শহরের উকিলপাড়া, নয়ামটি, করিম মার্কেট ও দেওভোগে সিসিটিভি ক্যামেরা আওতায় আনা হচ্ছে জানিয়েছেন সভাপতি বদিউজ্জামান বদু।
ছিনতাইয়ের ভয়ে নারায়ণগঞ্জে আসছে না পাইকারী ব্যবসায়ীরা। গত তিন মাস ধরে পাইকারী ব্যবসায়ীরা নারায়ণগঞ্জ বিমুখ করেছেন। এর ফলে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুটিয়ে পড়তে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। এদিকে রমজান ও ঈদকে সামনে রেখে সন্ধ্যা পর থেকে ২নং রেলগেইট এলাকা প্রতি মুহূর্তে ছিনতাই ও চুরি ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। চলন্ত রিক্সা ও যানবাহনের মধ্যে এমন ঘটনায় প্রতিরোধের সময়ও পাচ্ছে না ভুক্তভোগীরা। এদিকে ছিনতাই রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন নবাগত জেলা প্রশাসক মো. জাহিদুল ইসলাম।
হোসিয়ারি সমিতির সভাপতি বদিউজ্জামান বদু জানিয়েছেন, নারায়ণগঞ্জে শহরেরর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ছিনতাই ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে বৃদ্ধাঙুল দেখিয়ে প্রতিনিয়ত ছিনতাই ঘটনা হচ্ছে। গত ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রাকালে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে এক শিক্ষার্থী মৃত্যু হয়েছে। তখন পুলিশের তৎপরতায় ছিনতাই কমলেও এবার রমজানকে টার্গেট করে আবারো তৎপর হয়েছে। ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় শহরের কয়েকটি স্থানে ইতোমধ্যে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আরও কয়েকটি স্থানে আমরা ব্যবসায়ী ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা ক্যামেরা বসাতে চায়। নারায়ণগঞ্জ শহরে কোন ছিনতাই ঘটনা ঘটতে দিবো না। ছিনতাইকারী কারো স্বজন হতে পারে না, ওরা দেশের ও জনগণের শক্র। ২নং রেলগেইট উকিলপাড়া গলাচিপা ও পপুলার সামনে ছিনতাই বৃদ্ধি পেয়েছে। ছিনতাইয়ের সকল স্থান এরই মধ্যে জেলা প্রশাসক জানানো হয়েছে। তিনি আমাদের দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
অন্তর্বর্তী সরকার আমলেও লাগাতার ছিনতাইয়ে ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ শহরের এখন অভিশপ্ত নগরে রূপ নিয়েছে। জনসাধারণকে চরম দুর্ভোগের অপর নাম হয়েছে ছিনতাই। অন্যদিকে বাসা বাড়ি অফিসে দিন-রাতে চুরি ঘটনা রীতিমত সাধারণ জনগণের যন্ত্রণা হয়ে পড়েছেন। বিগত সরকার আমলে এমপি মেয়র ও নেতাদের দোষারূপ করে যানজট ছিনতাই ঘটনাগুলো ধামাচাপা দেয়া হত। এখন অন্তবর্তী সরকার আমলেও একই ঘটনায় তাদের আশ্রয় প্রশয় দাতাকে সনাক্ত করতে পারছে না আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা। এমনকি ডিসেম্বর ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায়ও তৎপর হয়নি পুলিশ। প্রায় সময়ে সন্ধ্যা রাতে রিক্সা আটকিয়ে ছুরি ভয় দেখিয়ে প্রকাশ্যে ছিনতাই ঘটনা ঘটছে। গত দুইদিন আগেও পপুলার সামনে রিক্সা থামিয়ে ছুরি প্রদর্শন করে ছিনতাই করে দুই যুবক।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ জানান, জনগণকে আরো সচেতন হতে হবে। যে কোন সময়ে ছিনতাই ঘটনা চলমানে অতিক্রম না করে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গঠন করা। ছিনতাইকারী একটি ছুরিতে জনগণকে আটকানো ক্ষমতা রাখে না। তাই গণসচেনতা এখন আমাদের প্রধান শক্তি। যারা ছিনতাই চুরি জড়িত তারা করো বন্ধু স্বজন হতে পারে না। ওরা দেশের জনগণের শক্র। যানজট আর ছিনতাই এখন শহরের অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা ওসি নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের পুলিশ সক্রিয় রয়েছে। ছিনতাই প্রতিরোধেথ আমরা সব ধরণের চেষ্টা করছি। আগে থেকে ছিনতাই কমেছে।