নিয়মিত মাসোহারা দিয়ে চলছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবৈধ যান
স্টাফ রিপোর্টার -ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে মেঘনা টোল প্লাজা পর্যন্ত প্রায় ১৪ কিলোমিটার এলাকায় চলছে অবৈধ যানবাহনের দৌরাত্ম্য। নছিমন, ভটভটি, ব্যাটারিচালিত রিকশা, রিকশা, ভ্যান ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা নির্বিঘ্নে চলাচল করছে। অভিযোগ রয়েছে, এ সব যানবাহনের চালকরা কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশকে মাসোহারা দিয়ে মহাসড়কে চলাচল করছে। তবে পুলিশ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এ ছাড়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর থেকে যাত্রামুড়া পর্যন্তও এসব যান চলাচল করছে। মহাসড়কে এমন যান চলাচলে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেই। বরং দালালদের মাধ্যমে টাকা নিয়ে হাইওয়ে পুলিশ এসব যান চলার সুযোগ করে দিচ্ছে। কাঁচপুর-মেঘনা টোল প্লাজা এলাকায় এসব অবৈধ যান চলাচলে দুর্ঘটনা বেড়েছে। কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের তথ্যমতে, গত ১৬ মাসে সেখানে ৯৭টি দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ৮৩ জনের। আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক।
কাঁচপুর থেকে মেঘনা টোল প্লাজা পর্যন্ত মহাসড়কের সাতটি স্থানে অবৈধ স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। এসব স্থানে ব্যাটারিচালিত রিকশা, ভ্যান, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ভটভটি রাখা হয়। এতে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
শনিবার (২৫ মে) মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে ব্যাটারিচালিত রিকশা, নছিমন, করিমন, ভটভটিসহ অনেক যানবাহন চলাচল করছে, যেগুলো মহাসড়কে চলাচল করা অবৈধ। হাইওয়ে ও থানা পুলিশের একাধিক গাড়ি চললেও এসব যান থামাতে দেখা যায়নি। বেশির ভাগ অবৈধ যান উল্টো পথে চলাচল করে। এসব গাড়ির চালকদের নেই লাইসেন্স বা প্রশিক্ষণ।
সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকদের দাবি, গত বছরের ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর হাইওয়ে পুলিশ টোকেন চালু করে। মাসে নির্দিষ্ট টাকা নিয়ে টোকেন দেয়। ফলে মহাসড়কে তিন চাকার বাহন চললেও কোনো বাধা দেয় না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশ প্রতি মাসে প্রতিটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও অটোরিকশা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা করে নেয়। টাকা আদায় করেন কাঁচপুরের হারুন অর রশিদ ও মোগরাপাড়ার ইসমাইল। পুলিশ ‘স্বাধীন বাংলাদেশ’ ও ‘ঈদ মোবারক’ নামে সংকেত টোকেন দেয়। যাদের এসব টোকেন থাকে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।
সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক ওমর ফারুক বলেন, ‘আমার মালিকের ১০টি গাড়ি আছে। সেগুলো আমি দেখভাল করি। হাইওয়ে পুলিশকে হারুন অর রশিদের মাধ্যমে মাসে সরাসরি বা বিকাশে ১০ হাজার টাকা দিই।’
এ বিষয়ে দালাল হারুন অর রশিদ বলেন, ‘এসব টোকেন ৫ আগস্টের আগে, এখন আর দেওয়া হয় না।’ অপর দালাল ইসমাইল জানান, তিনি শুধু আটক গাড়ি পাহারা দেন। টোকেন দিয়ে টাকা নেন না।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ বলেন, ‘এসব যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে। পুলিশ
নিয়মিত অভিযান চালায়। কিছু যান চোখ ফাঁকি দিয়ে চলে। তবে টাকার বিনিময়ে চলাচলের অভিযোগ সঠিক নয়।’