বিশেষ প্রতিনিধি -বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট সহচর, ভাষা সৈনিক, আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য প্রয়াত একেএম শামসুজ্জোহার ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এবার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কোনো কর্মসূচি কিংবা দোয়া মাহফিলের আয়োজন করতে দেখা যায়নি।
অন্যবছর এ দিনটিতে জেলার বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন আয়োজন করতে দেখা গেলেও এবার সুনসান নীরবতা লক্ষ্য করা গেছে। ১৯৮৭ সালের এই দিনে মৃত্যুবরণ করা এই রাজনৈতিক দিকপাল শামসুজ্জোহা তাদের উত্তরসূরিকেও রাজনীতিতে হাতেখড়ি দিয়ে যান। পিতার আশীর্বাদে তারাও রাজনীতিতে নিজের অবস্থান মজবুত ও একাধিকবার এমপি হয়েছেন। একেএম শামসুজ্জোহার তিন ছেলে প্রয়াত একেএম নাসিম ওসমান, একেএম শামীম ওসমান ও একেএম সেলিম ওসমান মহাজোটের একাধিকবার এমপি দায়িত্ব পালন করেছেন। গোটা জেলাজুড়ে ওসমান পরিবারের একক আধিপত্য ছিল। তবে শামীম ওসমানের বিভিন্ন নেতিবাচক কর্মকান্ডে ওসমান পরিবার সারাদেশে গডফাদারের পরিবার হিসেবে পরিচিত পেয়েছিল। সবশেষ গত জুলাই আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জে প্রকাশ্যে অনুসারীদের নিয়ে গুলি ছোড়েন শামীম ওসমান। তাদের গুলিবর্ষণে রিয়া গোপ নামের একজন ছয় বছর বয়সী শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ ঘটেছে। এ নিয়ে শামীম ওসমান সাধারণ মানুষের কাছে আরও গণশত্রুতে পরিণত হয়। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দুই ভাই সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জে ছেড়ে পালিয়ে যান। ওইদিন রাতেই তাদের বাড়িতে হামলা ভাঙ্গচুরের ঘটনা ঘটে। কিছুদিন পূর্বেও গত ৬ ফেব্রুয়ারি শামসুজ্জোহার পৈত্রিক বাড়ি বায়তুল আমান বুলডেজার দিয়ে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে এবার শামসুজ্জোহার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতে আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী সাহস করেনি।
বিগত বিএনপি, তত্ত্বাবধায়ক সব সময়েই নারায়ণগঞ্জে পালিত হতো আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা একেএম সামসুজ্জোহার মৃত্যুবার্ষিকী। কিন্তু ছাত্র গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এবারই প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী ছিল বিবর্ণ। ছিল না কোন আয়োজন। চাষাঢ়ায় হিরা মহলটি ২০ ফেব্রুয়ারী আসলে লোকে লোকারণ্য থাকলেও এবার ছিল সুনশান নিরবতায়।